দৃষ্টি-প্রদীপ

আমরা এ গাঁঁয়ে এসেছি তিন বছর এখনো হয়নি। তার আগে ছিলাম কার্সিয়াঙের কাছে একটা চা-বাগানে, বাবা সেখানে চাকরি করতেন। সেখানেই আমি ও সীতা জন্মেছি। সেখানেই আমরা বড় হয়েছি। তবে দাদা জন্মেছে হনুমান নগরে, বাবা তখন সেখানে রেলে কাজ করতেন।

দাদাকে আমরা সবাই ভালোবাসি। “দাদা বয়সে সকলের চেয়ে বড় হলেও এখনো সকলের চেয়ে ছেলেমানুষ। ও সকলের আগে খাবে, সকলের আগে ঘুমিয়ে পড়বে। ঘুরিয়ে কথা বললে বুঝবে না, অন্ধকারে একলা ঘরে শুতে পারবে না–ওর বয়স যদিও বছর চোদ্দ হল, কিন্তু এখনো আমাদের চেয়ে ও ছেলেমানুষ।”

এভাবেই দৃষ্টিপ্রদীপ উপন্যাসের কাহিনী আমাদের সামনে উন্মোচন হতে থাকে জিতু নামের একটি ছেলের জবানিতে। এটা বললে ভুল হবে না যে, এ উপন্যাসে বিভূতিভূষণের আধ্যাত্মিক চিন্তা-ভাবনা হয়তো সবচেয়ে বেশি প্রকাশিত হয়েছে।

জিতু এক ব্যতিক্রমধর্মী চরিত্র। তার চোখের সামনে হঠাৎ করে বাস্তবের মতো ভেসে ওঠে কাল্পনিক আরেক জগৎ।

“এ রকম একবার নয়, কতবার দেখেছি। আগে আমার মনে হত আমি যেমন দেখি, সবাই বোধ হয় ওরকম দদেখে। কিন্তু সেবার আমার ভুল ভেঙ্গে যায়। আমি একদিন মাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম– আচ্ছা মা, পাহাড়ের ওদিকে আকাশের গায়ে ও-সব কি দেখাা যায়?
মা বললেন, কোথায় রে?”

দৃষ্টিপ্রদীপ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয় উপন্যাস।


বই: দৃষ্টি-প্রদীপ
লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দ্যপাধ্যায়
বইটি সংগ্রহ করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *