পাখি উড়তে পারবে না, এটা আমরা সচরাচর ভাবতে পারি না।
এর কারণ হিসেবে ড. রেজা খান জানাচ্ছেন, ” উড়তে পারে না এমন কোনো পাখির প্রজাতি আমাদের দেশে বা আশপাশের দেশে নেই।”
কাজেই পাখি বললে যে আমাদের কেবল একটি উড়ুক্কু প্রাণীর কথা মাথার ভেতর উঁকি দেয় সেটা অস্বাভাবিক নয়।
তবে আমরা এও জানি উড়তে পারে না এমন পাখিও রয়েছে। তবে সে সংখ্যা নিতান্তই সামান্য:
“বিশ্বের মোট দশ হাজারের বেশি পাখির প্রজাতির মধ্যে মাত্র পঞ্চাশ প্রজাতির কম পাখি উড়ে না।”
এই স্বল্প সংখ্যক পাখির মধ্যেই রয়েছে আমাদের বহু পরিচিত পেঙ্গুইন বা উটপাখি।
রেজা খান আমাদের জানাচ্ছেন প্রাকৃতিকভাবে বাংলাদেশে কমবেশি ৭০০ প্রজাতির পাখি রয়েছে।
তথ্য হিসেবে দেখলে এটি কেবলই একটা শুকনো খটখটে তথ্য মাত্র। এটা জানা বা না জানাতে আমাদের কারও কিছু জায় আসে না আসলে।
তবে এই ৭০০ প্রজাতির পাখি থেকে যদি আমরা ৭০ প্রজাতির পাখিকেও চিনতে বা শনাক্ত করতে যাই তখন তা নিঃসন্দেহে একটা দারুণ রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হবে।
ড. খানের বরাতে আমরা জানছি পৃথিবীতে পাখির প্রজাতির সংখ্যা দশ হাজারের অধিক।
যে কোনো উৎসাহী এবং উদ্দীপ্ত মানুষের জন্য শখ হিসেবে এই পাখির পেছনে ছুটে বেড়ানো একটা জীবনব্যাপী শখ হতে পারে। আর এটা যদি হয় কারও পেশা তাহলে তো সোনায় সোহাগা।
লেখক সংক্রান্ত তথ্য
ড. রেজা খান বর্তমানে দুবাই সাফারিতে প্রধান বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত। এর আগে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন চিড়িয়াখানায় কাজ করেছেন। ১৯৭১ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন কলেজে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।
১৯৭৭ সালে তিনি পাখি বিশারদ ড. সালিম আলীর অধীনে মাঠ গবেষণা করে বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
যারা শখের বসে পাখি পর্যবেক্ষণ করেন তাদের জন্য বাংলা ভাষার অন্যতম তথ্যসমৃদ্ধ বই এটি। সহজেই বইটিকে পাখি পর্যবেক্ষণের ফিল্ড গাইড হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
বইটির একটি সীমাবদ্ধতা যে ছবিগুলো সাদাকালো। বোধ করি অতিমূল্য এড়াতেই সাদাকালো ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
তবে ঝরঝরে লেখার মাধ্যমে ড. রেজা খান ছবির অভাব নিঃসন্দেহে দূর করতে সক্ষম হয়েছেন। পাখি শনাক্ত করার জন্য লেখকের প্রাঞ্জল ও তথ্যপূর্ণ বর্ণনাই যথেষ্ট।
বইয়ের লিংক: আমাদের পাখির রাজ্য