ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষার্থীদের যে ১০টি বই পড়া উচিত

ইংরেজি সাহিত্যের জগতে প্রবেশ করার জন্য সঠিক বই বাছাই করা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রায়ই কঠিন হয়ে ওঠে। ফলে পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য মুখস্ত করার তোড়ে সাহিত্যের আসল আনন্দ উপভোগ অনেকের জন্য হয়েই ওঠে না বললে চলে।

এই তালিকায় এমন দশটি বই রাখা হয়েছে যা সাহিত্যকে বোঝা, উপভোগ করা এবং সাহিত্য বিষয়ে লেখার দক্ষতা গড়ে তোলার জন্য শিক্ষার্থীদের সাহায্য করবে।

উইলিয়াম জে. লঙ-এর English Literature

আমাদের দেশে ইংরেজি সাহিত্য পড়ার শুরুতেই শিক্ষার্থীরা প্রায়ই হোঁচট খায় লেখা এবং লেখককে ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে দেখতে না পারার কারণে। 

প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হয় বলে আমরা সাধারণত লেখক, লেখকের সময়কাল বা লেখকের লেখাকে সাধারণ জ্ঞান হিসেবে বিবেচনা করে থাকি। এতে সাহিত্য পড়ার জন্য যে সতেজ দৃষ্টিভঙ্গি দরকার সেটা বাদ পড়ে যায়। এবং কেবলমাত্র একটা তথ্য জানা বা না জানার মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। 

যে কোনো ইতিহাসের মতো সাহিত্যের ইতিহাসও একটা প্রাণবন্ত দলিল। সাহিত্যের ইতিহাস পড়ার সময় সবচেয়ে যেটা জরুরি সেটা হলো তথ্য মুখস্থ না করা, বরং প্যাটার্ন বুঝতে চেষ্টা করা এবং হাজার বছরের ঐতিহ্যের মধ্যে এক একজন লেখক বা তার লেখাকে দেখার চেষ্টা করা। এতে পড়া আনন্দঘন হয়ে ওঠে।

ইংরেজি সাহিত্যের ইতিহাসের ওপরে অজস্র ভালো বই লেখা হয়েছে। তবে শুরু করার জন্য খুব ভালো একটি বই হলো উইলিয়াম জে লঙ-এর লেখা English Literature বইটি। বইটির কলেবর বড় না হওয়ায় এবং উপস্থাপন অত্যন্ত প্রাঞ্জল হওয়ায় বাংলাদেশের শিক্ষার্থের কাছে বইটি জনপ্রিয়।  বইটির পুরো নাম English Literature: Its History and Its Significance for the Life of the English-Speaking World

আরেকটু বিস্তারিত পাঠের জন্য ডেভিড ডেইচেস-এর দুই খণ্ডের  A Critical History of English Literature ও পড়া যেতে পারে।

রিচার্ড গিল-এর Mastering English Literature

সাধারণত ইংরেজি সাহিত্যে শুরুর দিকেই শিক্ষার্থীরা অল্প অল্প করে কবিতা, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, নাটক বা উপন্যাসের মতো সাহিত্য নিয়ে সাহিত্য সমালোচনার লেখার হাতে খড়ি দেয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া ঘটে তেমন কোনো প্রস্তুতি ছাড়া। কেবলমাত্র নোটবই মুখস্ত করে। সাহিত্য পাঠের আনন্দ যেমন এতে পুরোপুরি উবে যায় তেমনি সাহিত্য নিয়ে চিন্তা করা এবং লেখা শেখার গুরুত্বপূর্ণ সময়টাও হারিয়ে যায়।

অধিকাংশ শিক্ষার্থী শিক্ষা জীবন শেষ করে প্রকৃত অর্থে বিশ্লেষণাত্মক লেখার দক্ষতা অর্জন না করেই। মূলত কোনো সাহিত্য সম্পর্কে যখন অ্যাকাডেমিক লেখা লিখতে হয়, তার ভিত্তিটা গড়ে ওঠে পড়ার সময়েই।

কবিতা আর গল্পকে যদি একইভাবে পড়া হয় তবে তা লেখার ক্ষেত্রে কোনো কাজেই আসে না। একইভাবে জানা প্রয়োজন নাটক পড়ার সময় কোন বিষয়গুলো খেয়াল করতে হয় আর উপন্যাসের ক্ষেত্রে কি কি খেয়াল করা প্রয়োজন। রিচার্ড গিল তার Mastering English Literature বইয়ে খুব সরল ভাষায় ধরে ধরে দেখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে কবিতা, গল্প, উপন্যাস বা নাটক পড়তে হয় এবং কিভাবে সেগুলো সম্পর্কে লিখতে হয়। 

সাহিত্য পাঠের শুরুতেই এ বিষয়গুলো থেকে কিছুটা ধারণা থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক জীবন অনেক আনন্দময় ও উপভোগ্য হতে পারে।

এডিথ হ্যামিলটন-এর Mythology

ইংরেজি সাহিত্য বা বলা চলে ইউরোপীয় সাহিত্যে পুরাণের উল্লেখ আসে বারে বারে। বিশেষ করে গ্রিক বা রোমান পুরাণের ধারণা না থাকলে হোঁচট খেতে হবে বারে বারে। কাজেই যাদের পুরাণ সম্পর্কে ধারণা নেই তাদের এ বিষয়ে চোখ বুলিয়ে নেয়া প্রয়োজন শুরুতেই। এডিথ হ্যামিলটনের মিথোলজি এ বিষয়ে একটি ক্ল্যাসিক বই হিসেবে সমাদৃত। তবে পড়তে হবে তথ্য হিসেবে নয় গল্প হিসেবে। সমস্ত ঘটনা ও নাম মনে রাখা জরুরি না, গল্পগুলো উপভোগ করা বেশি জরুরি।

অ্যান ল্যামোট-এর Bird by Bird: Some Instructions on Writing and Life

সাহিত্য নিয়ে পড়ার অর্থ আসলে সাহিত্য রচনা করতে শেখা নয় বরং সাহিত্য সম্পর্কে লিখতে শেখা। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সাহিত্য নিয়ে পড়াকে জীবনের একটি কার্যকর অভিজ্ঞতা করতে হলে লিখতে শেখার বিকল্প নেই। আর এ ক্ষেত্রে অ্যান ল্যামোট-এর এ বইটি একই সাথে দেবে অনুপ্রেরণা আবার প্র্যাকটিক্যাল গাইডলাইন। লেখার ভয় দূর করতে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াতে বইটি অপরিহার্য।

টি. জেড. ল্যাভিন-এর From Socrates to Sartre

সাহিত্য কখনোই জীবন, সমাজ ও বিশ্বাস থেকে দূরের কোনো বিষয় নয়। প্রত্যেক মানুষের মতো সাহিত্যিকরাও নিজ নিজ বিশ্বাস ও দর্শন গড়ে তোলেন তার জীবন অভিজ্ঞতাকে ব্যাখ্যা করার জন্য। লেখকের এই জীবনবোধ বিচ্ছিন্ন কোনো বিষয় নয়। কখনো তা অন্যান্য দার্শনিকদের চিন্তা দ্বারা প্রভাবিত, কখনো তার লেখা দার্শনিকদের জীবনদৃষ্টিতে প্রভাব ফেলে। সাহিত্যকে দর্শনের ইতিহাসের ভেতরে না দেখলে সাহিত্যের রস অনেকটাই অনাস্বাদিত থেকে যায়।

দর্শনের ইতিহাস পাঠের জন্য মোক্ষম একটি বই হলো টি. জে. লেভিন-এর From Socrates to Sartre বইটি।

মর্টিমার জে. অ্যাডলার-এর How to Read a Book

বিশ্ববিদ্যালয়ে সাহিত্যের শিক্ষার্থীদের পাঠের একটা বড় অংশ হলো সাহিত্য সমালোচনা লেখা। আর ভালো লেখার জন্য প্রয়োজন ভালো লেখা পড়া। এজন্য গভীরভাবে পড়তে পারা অত্যন্ত জরুরী।

অ্যাডলারের এই ক্ল্যাসিক বইটিতে রয়েছে কীভাবে নির্দিষ্ট বিষয়ে গভীরভাবে পড়তে হয় তার গোছানো গাইডলাইন। পড়ার সময় প্রয়োজনীয় প্রশ্ন করতে পারার অভ্যাস গঠন করতে এই বই সহায়ক। ইংরেজি সাহিত্যের বা যে কোনো সাহিত্যের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুতেই বইটিতে চোখ বুলিয়ে নেয়া অনেক উপকারী হবে নিঃসন্দেহে।

MLA Handbook for Writers of Research Papers

সাহিত্য বিষয়ে অ্যাকডেমিক লেখালেখি করতে গেলে যে মান বা শৈলী অনুসরণ করতে হবে তাই রয়েছে MLA Handbook-এ। আগেভাগে এ বিষয়ে ধারণা নিয়ে নিলে লেখালেখির ক্ষেত্রে অনাকাঙ্ক্ষিত হোঁচট খেতে হবে না। কিভাবে বিভিন্ন তথ্যসূত্র উল্লেখ করতে হয়, কিভাবে লেখা সাজাতে হয়, অন্যের লেখা চুরি না করে কীভাবে তা নিজের লেখায় ব্যবহার করতে হয় এরকম অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের জন্য বইটি সবসময়ই দরকার হবে।

এছাড়া লেখার শৈলীর জন্য আরও একটি রেফারেন্স বই ব্যবহার করলে বেশ কাজে আসে। লেখার শৈলীর জন্য ক্ল্যাসিক বই হিসেবে বলা যায় ই. বি হোয়াইট ও প্রফেসর স্ট্রাংক-এর The Elements of Style এর কথা। এছাড়া বেজারম্যান ও উইনার-এর লেখা Writing Skills Handbook ও ছোট কিন্তু ভালো একটি বই।

তবে মনে রাখা প্রয়োজন লেখার শৈলীর ক্ষেত্রে অনেক বই নাড়াচাড়া না করে যে কোন একটি বইকে মানদণ্ড হিসেবে ধরাই সুবিধাজনক।

পিটার ব্যারি-র Beginning Theory

সাহিত্য তত্ত্ব বিষয়ে সবচেয়ে সরল বইগুলোর মধ্যে পিটার বেরি-র এ বইটি অন্যতম। সাহিত্য নিয়ে পড়তে সাহিত্য তত্ত্বের সাথে পরিচয় থাকা বাঞ্ছনীয়। এতে পড়া ও লেখা অনেক সহজ হয়ে যায়। বইটিতে বেরি স্ট্রাকচারালিজম, বিউপনেবিশায়ন, নারীবাদ প্রভৃতি তত্ত্ব সাবলীলভাবে তুলে ধরেছেন।

যে কোনো রেফারেন্স গ্রামার বই

সাহিত্যের শিক্ষার্থীরা প্রায়ই লেখার ক্ষেত্রে ব্যকরণগত বিষয়ে মনোবল হারিয়ে ফেলেন। গ্রামারলি-র মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-নির্ভর টুল এক্ষেত্রে সাহায্য করে ঠিকই কিন্তু মনোবল গড়ে দিতে পারে না। তবে ইংরেজি ব্যাকরণের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য বই ধীরে হলেও মনোবল তৈরি করতে অভাবনীয় ভূমিকা রাখে।

বিভিন্ন ধরনের ব্যাকরণের বই রয়েছে যেগুলো ব্যাকরণকে বিভিন্ন দিক থেকে উপস্থাপন করেছে। যে বইটি আমার জন্য উপযোগী সেটিই আমার জন্য সেরা বই। কিছু ভালো এবং জনপ্রিয় বইয়ের মধ্যে রয়েছে মাইকেল সোয়ান-এর Practical English Usage, রেমন্ড মার্ফি-র Intermediate English Grammar। এছাড়া থম্পসন ও মার্টিনেট-এর A Practical English Grammar ব্যবহার করা যেতে পারে।

Buy here:

  1. Practical English Usage by Michael Swan
  2. Intermediate English Grammar by Raymond Murphy
  3. A Practical English Grammar by Thomson and Martinet

একটি নির্ভরযোগ্য অভিধান

বর্তমান যুগে ব্যাকরণ বইয়ের মতো অভিধানের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে গেছে বলেই মনে হয়। সাধারণ মানুষের জন্য কথাটি ঠিক। তবে সাহিত্যের শিক্ষার্থীদের জন্য অভিধানের অপরিসীম প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।  

প্রতিদিন সকালে ১০ মিনিট অভিধানের এলোমেলো চোখ বুলানোতেও সাহিত্যের শিক্ষার্থীদের লেখার ক্ষেত্রে দৃশ্যমান প্রভাব ফেলে। সব সময় ব্যবহারের জন্য অভিধানটি অবশ্যই ইংরেজি-ইংরেজি হওয়া প্রয়োজন এবং Oxford Advanced Learner’s Dictionary এক্ষেত্রে বলা যায় এককভাবে সেরা অভিধান।